মোঃ শামসুদ্দিন জুয়েল: করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ। তারপরও শিক্ষার্থীদের কাছে বেতন পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেন। বৃহস্পতিবার (৭ মে) অনলাইনে এই নোটিশ দেওয়া হলে ফেসবুকে সমালোচনা শুরু হয়। স্থানীয়রা বলছেন, ১১ এপ্রিল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এখনও লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়নি। কিন্তু লকডাউনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের স্কুলে গিয়ে বেতন পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
স্কুলের অধ্যক্ষ সালমা বারী সাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, আগামী ১০ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত (শুক্রবার বাদে) প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন গ্রহণ করা হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একাধিক কাউন্টারে শুধু অভিভাবকদের এসে বকেয়াসহ মে মাসের বেতন পরিশোধ করতে অনুরোধ করা হলো।
রোখসানা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাংবাদিকদের জানান, পরিবারের চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় বেতন পরিশোধ করা আমাদের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না।
বিলকিস আক্তার নামে আরেক অভিভাবক সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। করোনাভাইরাসের কারণে নিয়মিত বেতন হচ্ছে না। তাই ছেলের স্কুলের বেতন পরিশোধের বিষয়টি নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন। এই অবস্থায় স্কুল কর্তৃপক্ষকে এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেনের অধ্যক্ষ সালমা বারী বলেন, ‘অন্তত ৮০ ভাগ অভিভাবক বকেয়া বেতন পরিশোধ করার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তারা বেতন দিতে সক্ষম। তাদের কেউ কেউ ত্রাণ বিতরণ করছেন কর্মহীনদের মধ্যে। এছাড়া আমাদের বিদ্যালয়টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। চারতলা ভবন নির্মান করে ফান্ড খালি। নির্মাণ শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে আমরা অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছি। নোটিশটি আমরা অনলাইনেই দিয়েছি, বাইরে কোথাও দেইনি। অভিভাবকেরা স্বেচ্ছায় বেতন দিতে যোগাযোগ করার কারণে আমি বলেছি- বিচ্ছিন্নভাবে নেব না। যদি কেউ আসেন, তাহলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নেব। কিন্তু বেতন দিতেই হবে বিষয়টি এমন না, বেতন না দিলে কোনও শিক্ষার্থীর নাম কাটা যাবে না। এ বিষয়টি উল্লেখ করে আমরা আবারও নোটিশ জারি করবো।’
এ ব্যপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, সূর্যমুখী বিদ্যালয়ের বেতনের নোটিশের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা তাদের বলেছি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিদ্যালয়ে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। শুধু অনলাইনে ক্লাস নেওয়া যাবে। তারা আমাদের বলেছে নোটিশটি সরিয়ে নেবে। তারা বিদ্যালয় খোলা কিংবা বেতন আদায়ের চেষ্টা করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
লকডাউনের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের কাছে বেতন চেয়ে নোটিশ
