এপিপি বাংলা : আম্পানের তাণ্ডবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মৃতের সংখ্যা ৭২-এ দাঁড়িয়েছে। কলকাতা শহরের অনেক জায়গায় গাছ উপড়ে পড়েছে, আবার অনেক স্থান বিদ্যুৎ ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতিজনিত বিধি-নিষেধের কারণে জরুরি সেবা দেওয়াও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানাচ্ছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সূত্র।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কোভিড-১৯ রোগের চেয়েও ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে আম্পান। তিনি বলেন, ‘একের পর এক এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। আজ আমি একটি যুদ্ধাবস্থার মুখোমুখি হয়েছি।’
পশ্চিমবঙ্গের তিনটি জেলা – দক্ষিণ ও উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর আম্পানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কলকাতার অনেক রাজপথ পানিতে ভেসে গেছে। শহরটির প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
আম্পানে গোটা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে হাজার হাজার কাঁচা বাড়ি, জমির ফসল। উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার। ভেঙে গেছে বহু পুরোনো বাড়িঘর। ভেঙেছে সুন্দরবন অঞ্চলের বহু নদীর বাঁধ। প্লাবিত হয়েছে আশপাশের গ্রাম। মারা গেছে বহু গবাদিপশু।
আবহাওয়া দপ্তরের বক্তব্য অনুযায়ী, গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটায় পশ্চিমবঙ্গে প্রথম আঘাত হানে আম্পান। আঘাত হানে উপকূলীয় সুন্দরবন, হলদিয়া, দিঘাসহ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহু এলাকায়। এই এলাকায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার।
এরপর আম্পানের তাণ্ডবে হলদিয়া, দিঘা, মন্দারমণি, শংকরপুর, তাজপুর, কুলপি, কাকদ্বীপ পাথর প্রতিমা, নামখানা, ঝড়খালি, ক্যানিং, হিঙ্গলগঞ্জ, বকখালি, বাসন্তী, ডায়মন্ড হারবার, গোসাবাসহ উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ অংশ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে গবাদিপশু, সড়ক, সেতু, বাড়িঘর। দিঘা ও বকখালিতে প্রচণ্ড জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ঘাটে বাঁধা নৌকা, লঞ্চ ও ট্রলার।
আম্পানের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কলকাতা শহর। গত ৫০ বছরে কলকাতার মানুষ এ ধরনের ঝড় দেখেনি। ইতিমধ্যে কলকাতাজুড়ে শত শত গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় সড়ক যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। গাছ ভেঙে পড়েছে অলিতে গলিতে। আম্পানের তাণ্ডব ছড়িয়ে পড়ে মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান ও নদীয়াতেও।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে আগামীকাল শুক্রবার সশরীরে আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উড়োজাহাজ থেকে দুই রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি দেখবেন তিনি।
আম্পানে বিপর্যস্ত পশ্চিমবঙ্গ, ৭২ জনের মৃত্যু
