শনিবার (২০ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপ ‘আমাদের গণমাধ্যম-আমাদের অধিকার’ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আমাদের গণমাধ্যম-আমাদের অধিকার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের একজন সংবাদকর্মী প্রথম করোনায় আক্রান্ত হলেও প্রায় আড়াই মাসে এই সংখ্যা বেড়ে ৩৯৫তে অবস্থান করছে। এপর্যন্ত ৩৯৫ জন গণমাধ্যমকর্মী করোনা আক্রান্ত হলেও ৬ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে এবং উপসর্গ নিয়ে আরও ৭ জন মারা গেছেন। এভাবে আক্রান্তের সংখ্যা দীর্ঘ হওয়ায় গণমাধ্যমে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এছাড়া ৩৯৫ জনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০৬ জন। সুস্থ হওয়ার সংখ্যাটাও কম হওয়ায়ও গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
এদিকে, এই সংখ্যক সংবাদকর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে একাধিক জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশন চ্যানেল লকডাউনও করা হয়। ৩৯৫ জন সংবাদকর্মী আক্রান্ত হওয়ায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শে প্রায় তিন শতাধিক সাংবাদিক-কর্মচারীকে আক্রান্তের সংস্পর্শে আসায় সেলফ আইসোলেশনে পাঠায়।
সংবাদকর্মীদের শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলেন, এই মুহূর্তে চিকিৎসক, পুলিশ, সাংবাদিক এবং জরুরি প্রয়োজনে কর্মরত সকলকেই শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এ ব্যাপারে, মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাহমুদুর রহমান দুলাল বলেন, সংক্রমণের ঝুঁকি সবক্ষেত্রেই রয়েছে। তবে শারীরিক দূরত্ব যেখানে নেই, সেখানে ঝুঁকিটা বেশি। কোভিড-১৯’র প্রধান চিকিৎসাই হচ্ছে সচেতনতা। অ্যাওয়ারনেস ছাড়া এর আপাতত কোনো ট্রিটমেন্ট নেই। তাই সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। জরুরি প্রয়োজন, বিশেষ করে খাবার ও চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া কারোরই ঘর থেকে বের হওয়া উচিত নয়।
অপরদিকে, দেশে একের পর এক সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনগুলো। এই সংখ্যা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য অশনিসংকেত বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী বলেন, প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া উদ্বেগের বিষয়। সংবাদকর্মীরা ফ্রন্টলাইনে কাজ করেন। এজন্য তাদের ঝুঁকিটা বেশি। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। ঝুঁকি এড়িয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাংবাদিকদের জন্য করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করেছে। একই সঙ্গে আমরা ডিআরইউতে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছি। আমাদের সদস্য ও তাদের পরিবারের সুরক্ষার কথা চিন্তা করেই এমনটি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিচ্ছি আমরা। এছাড়া করোনা আক্রান্ত সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম ও আর্থিক সহায়তা সংগঠনের পক্ষ থেকে করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।