Wednesday, November 29, 2023
Home > আঞ্চলিক সংবাদ > সরকারের উন্নয়নের দৃষ্টিসীমার বাহিরে দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়!

সরকারের উন্নয়নের দৃষ্টিসীমার বাহিরে দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়!

বিজয়নগর প্রতিনিধি : বিজয়নগর উপজেলার একমাত্র সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দাউদপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়। সরকারের সু-দৃষ্টির অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চরম ভোগান্তিতে পরছে।তা যেন দেখার কেউ নেই।

বিজয়নগর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ চান্দুরা ইউনিয়নের আমতলী বাজারের পূর্বপাশের প্রায় ১২ একর বিশাল জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ১৯৩১ ইং সালে এলাকাবাসীর উদ্যোগে শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য স্থাপিত হয়। প্রায় ১২ একর জায়গার মধ্যে একটি বড় খেলার মাঠ ও দুইটি দীঘি রয়েছে।

এই বিদ্যালয় থেকে গত ৯০ বছরে লক্ষাধিকের চেয়েও বেশী শিক্ষার্থী শিক্ষাগ্রহণ করে নিজেদেরকে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে।যার মধ্যে উলেক্ষযোগ্য হল বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এডঃ তানবীর ভূঞা,সাবেক সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী, পুলিশের সাবেক ডিআইজি আলী ইমাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আব্দুল বাছির,ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নজরুল ইসলাম,ডাঃ এ কে আজাদ সহ দেশ বিদেশে অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে কর্মজীবন অতিবাহিত করছেন।

উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২০০ ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত রয়েছে।তাদের জন্য ৪ টি ভবন থাকলেও একটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত ও একটি টিনসেট ঘর রয়েছে। যার মধ্যে বৃষ্টির মৌসুমে অনেক সময় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়।

বিদ্যালয়টিতে সর্বশেষ সরকারি বরাদ্দকৃত ভবণ নির্মাণ হয়েছিল ২০০২/৩ অর্থবছরে।তারপর ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও বড় কোন সরকারী বরাদ্দ বিদ্যালয়টিতে আসেনি।

এই দীর্ঘ সময় বিদ্যালয়েন কোন সরকারি বরাদ্দ না আসায় দুইটি দীঘি থেকে আসা নিজস্ব আয় থেকে একটি টিনসেট নির্মাণ করেছিল।কিন্তু তাও এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়েছে পরেছে।

গত ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তারিখে সরকারি প্রজ্ঞাপনে বিদ্যালয়টি জাতিয়করণ হয়েছে।কিন্তু জাতিয় করণ করার পরেও সরকারী নিয়ম অনুযায়ী সকল সুযোগ সুবিধা না আসায় বিপাকে পরেছে বিদ্যালয় পরিচালনার কার্যক্রম। তার মধ্যে আবার সরকারের এক নির্দেশে গত ৩ বছর যাবত সকল উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ রাখায় দুইটি দীঘির পাড় ভেঙ্গে ছাত্রাবাস বিলিনসহ চার পাশের বাড়িঘর হুমকী মুখের মুখে পড়েছে।

দুইটি দীঘির চার পাশের জনবসতিরা একাধিক বার পাড় সংস্কারের জন্য লিখিত প্রতিকার চেয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেও কোন প্রতিকার চেয়ে পাচ্ছে না।

এমন ভবন সংকট ও শিক্ষা কার্যক্রম প্রতিবন্ধকতা পরেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ৪ টি রুম নিজেদের দখলে নিয়ে উপজেলার সরকারি বিনামূল্য বই বিতরণের জন্য গোডাউন বানিয়ে রেখেছে।যা মরার উপর খাড়ার গা এর মত।

বিদ্যালয়টি ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা ৫ বার জেলা পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ হবার গৌরব অর্জন করে।২০১৬ সালে ব্রাক কর্তৃক বির্তক প্রতিযোগিতা চট্রগ্রাম বিভাগের রানার্সআপ হয়েছিল।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ২০ জন শিক্ষকের জায়গা ১৩ জন রয়েছে।এছাড়া ৬ জন অতিথি শিক্ষক দিয়ে কার্যক্রম কোন রকম চালিয়ে যাচ্ছে।

এ প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের কনসালটেন্ট ডাঃ এ কে আজাদ আক্ষেপ করে বলেন-“দুর থেকে যখন দেখি প্রিয় শিক্ষাঙ্গনের বেহাল অবস্থা তখন কষ্ট লাগে।ভাল মানের শিক্ষার্থী গড়ে তুলতে হলে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষার সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করা ও মেধাবী মানসম্মত শিক্ষক।”

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন-“অনেক বার ক্লাসরুম,শিক্ষক,স্টাফসহ বিভিন্ন সংকটের কথা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এখনো দৃশ্যমান কোন কিছু বরাদ্দ পাচ্ছি না।এর মধ্যে সরকারিকরণ হলেও সরকারি কোন সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছি না। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছি। ”

উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি ( ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার) ও দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রাবেয়া আফছার সায়মা বলেন-“আমি নতুন আসছি। বিদ্যালয়ের বিস্তারিত কিছু জানিনা।আমি খুঁজখবর নিয়ে দেখছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *