Tuesday, May 23, 2023
Home > আন্তর্জাতিক > পি কে হালদার নিয়ে ভারতের তদন্তের তথ্য চায় বাংলাদেশ

পি কে হালদার নিয়ে ভারতের তদন্তের তথ্য চায় বাংলাদেশ

এপিপি বাংলা : বাংলাদেশে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্নসাৎ এবং পাচারের অভিযোগে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার বা পি কে হালদার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেখানে যে তদন্ত হচ্ছে, সেই তদন্ত সম্পর্কে তথ্য দেয়ার জন্য বাংলাদেশ অনুরোধ জানাবে বলে জানা গেছে।

ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের কর্মকর্তারা বলেছেন, যেহেতু গ্রেপ্তারের পর ভারতেও পি কে হালদারের অনেক সম্পদ থাকার খবর বেরিয়েছে, সেজন্য সেখানকার তদন্তের তথ্য বাংলাদেশের জানা প্রয়োজন।

ভারতের সাথে যোগাযোগ করে তাকে দ্রুত ফেরত আনার ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারেও দুদক বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে।

বাংলাদেশে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং পিপলস লিজিং সহ চারটি প্রতিষ্ঠানের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্নসাৎ এবং পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদকের ৩৬টি মামলা রয়েছে।

এখন ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দেশটির ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট বা ইডি যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গের অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় মি: হালদারের বাড়িসহ স্থাবর অনেক সম্পদ কেনার কথা বলা হয়েছে।

পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাৎ এবং পাচারের অভিযোগে দুদকের ৩৬টি মামলা রয়েছে।
ছবির ক্যাপশান,পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাৎ এবং পাচারের অভিযোগে দুদকের ৩৬টি মামলা রয়েছে।

ভারতের তদন্তের তথ্য দুদকের কেন প্রয়োজন

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ বলেছেন, ভারতের তদন্তে যে সব তথ্য পাওয়া যাবে, সেই তথ্য দেয়ার জন্য দুদক অনুরোধ করবে।

“ভারতে তার (পি কে হালদার)কী সম্পদ আছে-সেটাতো আমাদের জানা ছিল না। এখন তো তা প্রকাশ হচ্ছে। ঐ তথ্য সংগ্রহ করারও আমরা চেষ্টা করবো,” বলেছেন দুদকের চেয়ারম্যান।

তিনি আরও জানিয়েছেন, দুদক ভারতের সাথে যোগাযোগ করে সেই তথ্য সংগ্রহ করবে।

“আমরা (দুদক) ভারতে আমাদের কাউন্টারপার্ট যারা আছে, তাদের সাথে যোগাযোগ করবো। এছাড়া আমাদের সরকারের মাধ্যমে ও ভারতে আমাদের অ্যামবেসির মাধ্যমেও আমরা চেষ্টা করবো।”

তিনি উল্লেখ করেন, এসব চেষ্টার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হলে দুদকের মামলাগুলোর তদন্তে তা সহায়ক হবে।

এখন ভারতেও পি কে হালদারের বিরুদ্ধে সেই দেশের পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র রাখা এবং সেখানে সম্পদ কেনার অভিযোগ তদন্তের কথা বলা হচ্ছে।

সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের আইনে ভারতের সাথে যৌথভাবে তদন্ত করার কোন সুযোগ নেই বলে দুদকের আইনজীবী খোরশেদ আলম জানিয়েছেন। সেজন্য দুদক এখন ভারতের তদন্তের তথ্য বিনিময়ের কথা বলছে।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ফাউজিয়া করিম বলেছেন, তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে কোনো আইনেই বাধা নেই।

“ভারতে যৌথ তদন্ত হয়তো সম্ভব হবে না। কিন্তু এই টাকাগুলো যদি সে (পি কে হালদার) ভারতে বিনিয়োগ করে থাকে, তা ভারত হয়তো তদন্ত করতে পারে। সেই তদন্তের তথ্য তারা বাংলাদেশের সাথে শেয়ার করতে পারে,” বলেন আইনজীবী ফাউজিয়া করিম।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতের তদন্তের তথ্য পেতে মন্ত্রণালয়ও উদ্যোগ নেবে।

তবে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের দু’দিন পরও ভারত বাংলাদেশকে সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন, ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর সে অনুযায়ী বাংলাদেশ পদক্ষেপ নেবে।

কর্মকর্তাদের বক্তব্য হচ্ছে, ভারতে তদন্তে কতটা সময় প্রয়োজন হয়, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। সেজন্য বাংলাদেশ এখন ভারতের তদন্তের তথ্য বিনিময় চায়। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাকে ফেরত আনার বিষয়ে বাংলাদেশ গুরুত্ব দেবে।

Like & Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *