এপিপি বাংলা : দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আবারও আন্দোলনে চা শ্রমিকরা। রোববার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টায় হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে আটকে পড়েছে শত শত যানবাহন ।
তারা দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এদিকে শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের অফিসে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে চা-শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি খোকন তাঁতি বলেন, চা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে আসছে। আমরা যে মজুরি পাই তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষিত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
লস্করপুর চা-ভ্যালির সভাপতি রবিন্দ্র গৌড় বলেন, সুরমা, তেলিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকরা নিজ নিজ চা বাগানে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা জগদীশপুর পয়েন্টে এসে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।
জেলার চুনারুঘাট উপজেলার চান্দপুর চা বাগানের বাসিন্দা চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, একাধিকবার শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চা সংসদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। মালিকপক্ষ ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা দৈনিক মজুরি দিতে চাচ্ছেন। শ্রমিকরা তা মানছেন না।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পার হয়ে যায়, মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এর প্রতিবাদে ৯-১২ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন চা-শ্রমিকরা। তারপরও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।