নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারো মুখাপেক্ষী হয়ে নয়, নিজের পায়ে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে দেশের চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন কালে তিনি এ কথা বলেন।
‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশ’ স্লোগানে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাণিজ্য মেলার মাঠে আয়োজিত চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা-২০১৮ এর শুভ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। বাংলাদেশ তখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন ছিল। সাক্ষরতার হার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং রাস্তাঘাট ব্যাপকভাবে তৈরি করেছিলাম।
বাংলাদেশের জন্য সেটা স্বর্ণযুগ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কিন্তু ২০০১ সালে আমরা বেশি ভোট পেয়েও কোনো একটা চক্রান্তের কারণে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। সাতটি বছর মানুষের জীবন থেকে হারিয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘২০০৮ সালে ফের সরকারের ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। আমরা ক্ষমতায় এসে মানুষের জন্য স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি। জাতির পিতার নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয় তিনি দিয়ে গেছেন। জাতির যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, সেই আকাঙ্ক্ষা নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের জীবনমান উন্নত করা, তাদের সুন্দর জীবন উপহার দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, শুধু বর্তমানে যাঁরা আছেন তাঁরাই নন, আমাদের তরুণ প্রজন্ম বা আগামী প্রজন্ম যাতে উন্নত জীবন পায়, সেই পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে না, ভিক্ষা করে চলবে না। নিজের শ্রম দিয়ে, মেধা দিয়ে এ দেশকে গড়ে তুলবে, আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেÍজাতির পিতা এটাই সব সময় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘ভিক্ষুক জাতির কোনো ইজ্জত থাকে না।’
‘ভিক্ষুক জাতি হিসেবে নয়, আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বাঙালি জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে চলেছি,’ যোগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
এবারের মেলায় পর্যটন খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ জন্য আলাদা একটি স্টলের পাশাপাশি জেলা কর্নারগুলোতে পর্যটন বিষয়ক নানা তথ্য দেয়া হবে।
এ মেলার বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মো. ফেরদৌস জানান, এবারের উন্নয়ন মেলায় মোট ৩৩০টি স্টল রয়েছে। এসব স্টলের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০টি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ১৯টি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৬টি, কৃষি মন্ত্রণালয় ১৬টি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০টি এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ৯টি স্টলে কর্মকা- প্রদর্শন করবে।
চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা উপলক্ষে ৪ অক্টোবর দুপুরে ইআরডিতে বিদেশি কূটনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। পরে তারা মেলাও পরিদর্শন করবেন বলে জানানো হয়। এ ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন মেলার তিনটি সেমিনার হবে।
মেলার প্রথম দিনে বিকেল ৫টায় ‘বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। দ্বিতীয় দিনে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ শীর্ষক সেমিনার এবং শেষ দিনে ‘শিক্ষিত জাতি সমৃদ্ধ দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় বিভিন্ন জেলা বিষয়ে ব্র্যান্ডিং করা হবে। তুলে ধরা হবে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য। মেলা শেষ হবে শনিবার।
নিজের পায়ে দাঁড়াবে বাংলাদেশ : শেখ হাসিনা
