নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাক, ৭ অক্টোবর : দেশের জনগণকে ‘মালিকের ভূমিকা’ পালন করার আহ্বান জানিয়ে গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, অবাধ নির্বাচনের দাবি আদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব নয়।
রোববার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া আয়োজিত মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেটা অসম্ভব মনে করা হতো, সেটি সম্ভব হলো। এটা তো অসম্ভব কিছু না। দেশের সংবিধানে এটা প্রথমেই লেখা আছে, জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। দেশের সবাই অসহায় বোধ করছে। সেজন্য মালিকানা ভোগ করতে হলে মালিকের মতো ভূমিকা অবশ্যই রাখতে হবে। এজন্যই অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
দেশের জনগণ দেশের মালিকানায় না থাকায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রবীণ এই আইনজীবী।
তিনি বলেন, ‘দেশ যদি জনগণের মালিকানায় না থাকে, পাইকারি হারে লুটপাট হয়। পত্রপত্রিকায় দেখেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাট হচ্ছে। এগুলো যায় কোথায়? বিদেশে যায়। দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে না, নতুন কল-কারখানা হচ্ছে না। অর্থাৎ স্বাধীনতার যে প্রতিশ্রুতি তা পূরণ হচ্ছে না। আজকে জনগণ তা ভালোভাবে বুঝতে পারছে। সেজন্য যেখানে যাই, অসাধারণ একটা সাড়া পাই।’
‘আজকে আপনাদের উপস্থিতি আমাদের এই আশ্বাস দিচ্ছে যে, ১৬ কোটি মানুষ এই জিনিসটি বুঝে গেছে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিবর্তন আনতে হবে। সেই কারণে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করছি। বৈধ পরিবর্তন আসতে হলে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই, বলেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।
অবাধ নির্বাচনের দাবি আদায়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজে নামার কথা জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমাদের এই আন্দোলন অবশ্যই সফল হবে। অনেকটাই সফল হয়েছে। কোনো কিছু আদায় করতে হলে ঐক্যবদ্ধ জনগণের আন্দোলন দিয়ে সেটি আদায় করা যায়।’
দেশব্যাপী গায়েবি মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল, নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। সবাইকে মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু এখন উল্টোটা হয়েছে। কাউকে মুক্তি তো দেওয়াই হয়নি, নতুন নতুন হাজার হাজার গায়েবি মামলা দায়ের হয়েছে।’
জাতীয় ঐক্য গড়ার আন্দোলন সফল হবে, এ দাবি করে গণফোরামের সভাপতি বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে চেষ্টা করতে হবে, এই দেশ কোনো ব্যক্তি, দল বা পরিবারের নয়। এই দাবিটা রেখে অতীতে যেমন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে প্রতিবার সফল হয়েছি, এবারও অব্যশই সফল হবে।’
‘জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরে আসবে। অসাধারণ সম্ভবনার একটি উন্নত দেশ গড়ার কাজে লাগিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন অবশ্যই হবে। নাগিরকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন কোনো স্বৈরাচার সরকার আটকাতে পারবে না,’ বলেন ড. কামাল হোসেন।
মানববন্ধনে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব মোস্তফা আমিন, ডাকসুর প্রাক্তন ভিপি সুলতান মুহাম্মদ মনসুর, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা শওকত, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, গণতান্ত্রিক দলের সভাপতি সামছুল আলম চৌধুরী, গণদলের সভাপতি এ টি এম গোলাম চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা অসম্ভব নয় : ড. কামাল
