ডেস্ক রিপোর্ট :
ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব ‘ভারতরতœ’ পেয়েছেন দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। এ নিয়ে গতকাল দুপুরে ফোন করে মুখার্জিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে ভোটের আগে এই খেতাব দেওয়া নিয়ে নানা আলোচনাও চলছে।
প্রণব বাবুর সঙ্গে ‘ভারতরতœ’সম্মান পাচ্ছেন আরও দুইজন। জনসংঘের নেতা নানাজি দেশমুখ আর আসামের ভূমিপুত্র, কিংবদন্তি গায়ক ভূপেন হাজরিকা। দুইজনই প্রয়াত।
আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভারতরতœ’সম্মানের পিছনে ইদানিং যে বহু অঙ্ক জড়িয়ে থাকে, তা একান্তে কবুল করেন দিল্লিতে ক্ষমতার অলিন্দে ঘোরাফেরা করা অনেকেই। তাদের মতে, ২০১৪ সালে সচিন টেন্ডুলারকে ‘ভারতরতœ’দেওয়ার পিছনে ছিল তরুণ-ভোট টানতে মনমোহন সিংহ সরকারের মরিয়া চেষ্টা।
বিজেপি ক্ষমতায় এসেই ‘ভারতরতœ’ঘোষণা করেছিল অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং মদনমোহন মালব্যকে। তখনও জল্পনা কিছু কম হয়নি। জল্পনা এবারও।
অনেকের মতে, হিন্দি বলয়ে জমি ক্ষয় হতে শুরু হওয়ার পর আসন্ন লোকসভা ভোটে পূর্ব ভারতই বিজেপির পাখির চোখ। তাই প্রণববাবুকে ‘ভারতরতœ’দিয়ে বাংলার মন জয়ের চেষ্টা করলেন মোদি। কংগ্রেস এবং তৃণমূলকেও চাপে ফেলার চেষ্টা করলেন এর মাধ্যমে।
অন্যদিকে, নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আসামিদের মধ্যে যে ক্ষোভ ছড়াচ্ছে, ভূপেন হাজরিকাকে ‘ভারতরতœ’দিয়ে তাকে প্রশমিত করার চেষ্টা করা হলো বলে মনে করা হচ্ছে। তা ছাড়া, বাংলাতেও হাজরিকার প্রভাব যথেষ্ট।
আর সংঘের মন রাখতে সম্মান দেওয়া হলো নানাজি দেশমুখকে।
‘ভারতরতœ’ঘোষণার পর মোদি টুইট করেন, ‘‘প্রণবদা আমাদের সময়ে অসাধারণ রাষ্ট্রনায়ক। নিঃস্বার্থ ও অক্লান্তভাবে দশকের পর দশক ধরে দেশের সেবা করেছেন। তার প্রজ্ঞা ও মেধার তুলনা হয় না।’’
তবে ভোটের মুখে বিজেপি যখন একের পর এক কংগ্রেসি নেতাকে ‘কেড়ে’নিতে চাইছে, তখন ঘর সামলাতে আসরে কংগ্রেসও। প্রণব বাবুকে অভিনন্দন জানিয়ে করা টুইটে রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘আমাদেরই একজনের অপরিসীম অবদান যে স্বীকৃতি পেল, তা কংগ্রেসের কাছে অত্যন্ত গর্বের।’
খেতাব পাওয়ার পর প্রণব মুখার্জি প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘‘এটা গোটা জীবনে কাজের স্বীকৃতি তো বটেই, বাঙালি হিসেবেও গর্বিত।’’
টুইটারে তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি সব সময় বলেছি, আজ আবার বলছি, এই মহান দেশের মানুষদের যতটা না দিতে পেরেছি, তার থেকে অনেক বেশি পেয়েছি।’’
‘ভারতরত্ন’ খেতাব পেলেন প্রণব মুখার্জি
