নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘যা মনকে স্পর্শ করে তাই আমার লেখাতে প্রকাশ পায়। মনকে আন্দোলিত করে এমন সব কিছুই আমার লেখায় স্থান পায় বলে মন্তব্য করেছেন কবি পারভীন রেজা।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সহধর্মীনি পারভীন রেজা। তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, সাহিত্যিক ও সমসাময়িক লেখিকা।
অমর একুশে বইমেলা, সাহিত্য চর্চা, সাহিত্য জগতে তার বেড়ে উঠা ও বর্তমান সময়ের লেখক-লেখিকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পারভীন রেজা।
আপনার লেখা-লেখি শুরু করেছেন কবে থেকে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যখন খুব ছোট। ক্লাস ফোরে পড়ি। তখন আমার মা মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর নিজের কষ্টগুলোকে লুকানোর জন্য, মন ভালো করার জন্য আব্বা বই পড়তে বলতেন। বিভিন্ন বই কিনে দিতেন। তখন ওই বই পড়ে আমিও লেখা-লেখি শুরু করি। ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় আমার প্রথম কবিতা প্রকাশ পায়। খুলনাতে দৈনিক অনির্বাণ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় কবিতাটি। কবিতার নাম একটু সঙ্গ দিতে। এরপর থেকে গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লিখে যাচ্ছি।
আপনার লেখক হওয়ার পেছনে বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছেন কে? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার আব্বা। বিয়ের পর আমার স্বামী শ ম রেজাউল করিম। তার অনুপ্রেরণায় ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নীহারিকা।’
এ পর্যন্ত কতগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে আপনার? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘বেশ কয়েকটি গল্প, নাটক, কাব্য গ্রন্থ লিখেছি আমি। ১৯৯৯ সালে নীহারিকা (কাব্যগ্রন্থ), ২০১০ সালে এবং যুদ্ধ (নাটক), ২০১১ সালে ডানা ভাঙ্গা পাখি (কাব্যগ্রন্থ), ২০১৫ সালে প্রিয়জন (গল্পগ্রন্থ), ২০১৬ সালে প্রিয় শিমুল (কাব্যগ্রন্থ), ২০১৮ সালে নোনাজল (কাব্যগ্রন্থ) ও ২০১৯ সালে ডাকাতিয়া জয়+পদ্মপাতা (কাব্যগ্রন্থ)।
লেখালেখি নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি ধরণের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মানুষ অনেক স্বপ্ন দেখে। আমিও স্বপ্ন দেখি। লেখালেখি নিয়ে আমার স্বপ্ন হলো একজন লেখক হিসেবে যতদূর গেলে স্বপ্ন পূরণ হবে। আমি সেই পর্যন্ত যেতে চাই। স্বয়ংসম্পূর্ণ লেখক হয়ে উঠতে চাই।
নতুন লেখকদের নিয়ে আপনার চিন্তা কি? জবাবে পারভীন রেজা বলেন, ‘নতুন লেখকরা ভালো প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। আমি বাঙালি, বাংলা ভাষাকে ভালোবাসি। প্রতিটি বাঙালি তার সুকুমার বৃত্তিতে লেখক হয়ে ওঠে। কারো প্রতিভা প্রকাশ পায়, কেউ সুযোগ পায় না। এই নতুন লেখকরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। তারাই বাংলা ভাষাকে আরও দূরে নিয়ে যাবে। বাংলা একদিন পুরো বিশ্বে অবস্থান করে নেবে, আর নতুন লেখকরাই সেই কাজটা করবেন।
পারভীন রেজার পাঠকদের উদ্দেশ্যে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘আমার পাঠকরা অনেক আন্তরিক। কারো কাছ থেকে রুষ্ট আচরণ পাইনি। আমার পাঠকের সংখ্যাও কম নয়। পাঠকরা বইকে অনেক বেশি গ্রহণ করেন। পাঠক না থাকলে কি এত বই বের হতো। পাঠকের সুদৃষ্টি রয়েছে নতুন পুরাতন লেখকদের প্রতি, লেখার প্রতি। আর পাঠকরা আছেন বলে এখনও লেখকরা প্রাণের মেলায় মিলিত হন।
প্রগতিশীল, নারী উন্নয়নে, নারী নেতৃত্বে বইয়ের গুরুত্ব কতটুকু? উত্তরে এই লেখিকা বলেন, ‘আমরা জ্ঞান আহরণ করি বইয়ের মাধ্যমে। বই মানুষকে উৎকর্ষিত করে। আর তাই নারীর অগ্রযাত্রায় বইয়ের বিকল্প নেই। নারী নেতৃত্ব গড়ে তুলতেও বইয়ের ভূমিকা অপরিসীম। বই আমাদের আলো দেখায়। আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে।
যা মনকে স্পর্ষ করে তাই লিখি : কবি পারভীন রেজা
