এপিপি বাংলা : মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। তারা জড়িয়ে পড়ছেন হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, মাদক বিক্রি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে। বিঘ্নিত হচ্ছে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি।তাতে করে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি শৃঙ্খলা হুমকির মুখে পরছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় আড়াই বছরে তাদের বিরুদ্ধে মোট ৫৪০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ২০৯ জনকে। মামলাগুলো হয়েছে— ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মাস থেকে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে।
রাখাইন রাজ্যের নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা।
রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছে, ভুয়া কাগজ পত্র দিয়ে পাসপোর্ট করে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা,কাজের খোঁজে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা,স্থানীয় লোকজন সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলার মত নানা অপরাধে পরিবেশ অশান্ত করছে।যা এক সময় দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের শান্তি শৃঙ্খলা হুমকির মুখে ফেলবে বল আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।তাই তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর জুড় চেষ্টা করার দাবী সচেতন মহলের।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে। মোট ২৬৩টি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৪৩৬ জনকে।
এছাড়া হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া ৪৪টি মামলায় ১৬০ জন; ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ৩৩টি মামলায় ৫৮ জন; মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ২৫টি মামলায় ১১৪ জন; অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের হওয়া ৪২টি মামলায় ৯০ জন; অপহরণের অভিযোগে ১৫টি মামলায় ৭৯ জন; ফরেনার্স অ্যাক্টে ৩৮টি মামলায় ৭৬ জন; ডাকাতি ও ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার অভিযোগে ৯টি মামলায় ৩২ জন; বিশেষ ক্ষমতা আইনে ২৩টি মামলায় ৪৫ জন; পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ১টি মামলায় ৮ জন এবং অন্যান্য অভিযোগে দায়ের হাওয়া ৪৭টি মামলায় ১১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন জানান, রোহিঙ্গারা নিজেদের মধ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে বেশি জড়িয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পগুলোতে প্রায় এক হাজার পুলিশ সদস্য নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি শুরু থেকে দায়িত্ব পালন করছেন সেনা সদস্যরা। র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনী সহায়তা দিচ্ছে আমাদের। ইতোমধ্যে কাঁটা তারের বেড়া দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই কার্যক্রম শেষ হলে নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে।