Tuesday, December 5, 2023
Home > আঞ্চলিক সংবাদ > বিজয়নগরের প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মহি উদ্দিন

বিজয়নগরের প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মহি উদ্দিন

মোঃ শামসুদ্দিন জুয়েল : প্রতিরোধে প্রথম সারির যোদ্ধা হিসেবে সর্বস্তরের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মোঃ মহি উদ্দিন (৩৩)। বিজয়নগর উপজেলার নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখনো সম্পুর্ণ ভাবে চালু না হওয়ায় এবং হাসপাতালটিতে সম্পুর্ণ পদের জন্য লোক নিয়োগ না হওয়ায় টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) পদটি শূন্য। তাই উক্ত পদটির দায়িত্ব পরে মহি উদ্দিনের কাঁধে।পাশাপাশি পরিসংখ্যানবিদ পদটিও শূন্য সেটাও মহি উদ্দিন চালিয়ে যাচ্ছে।

করোনা শুরু থেকে জেলার একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে এই জনবলহীন হাসপাতালটিকেই করে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি।সেটার মধ্যে আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা, বিভিন্ন দেশ থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রবাসীর আসলে এখানে রাখা ও তাদের সার্বক্ষণিক দেখাশোনা চিকিৎসা সেবা ভাল মন্দ সবেই কর্ম সংকটের মধ্যে করে যাচ্ছে মহি উদ্দিনের নেতৃত্ব একটি টিম।

টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) এর দায়িত্বের পাশাপাশি টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) ও পরিসংখ্যানবিদ পদের দায়িত্ব পালন করেও সে করোনার শুরু থেকে গ্রামে গ্রামে গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ, করোনা উপর্সগ নিয়ে মৃত্যু ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহসহ
স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারী, সি,এইচ,সি,পিদের নিয়ে জেলা একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পরিচালনায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

এপর্যন্ত বিজয়নগর উপজেলায় ১৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।এর মধ্যে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩ জন ডাক্তার,৪ জন স্বাস্থ্য সহকারীসহ মোট ৭ জন আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে তারা করোনাকে পরাজিত করে এখন সুস্থ হয়ে আবারো করোনা যুদ্ধে নিয়োজিত হয়েছেন।

জেলার একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ৭ই মার্চ থেকে শুরু হয়ে ভারত থেকে আগত,বিদেশ থেকে আগত,জেলার বাহিরে করোনা আক্রান্ত এলাকা থেকে আগত লোকজন এখন পর্যন্ত ৫৬৭ জন তার সেবা গ্রহন করেছে।

উপজেলার এখন পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ করেছে ৭০৪ জন,নমুনার ফলাফল এসেছে ৫০৭ জনের,নেগেটিভ ফলাফল এসেছে ৪৯০ জনের,পজেটিভ ১৮ জন তার মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১০ জন বাকি ৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।

সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ আলাল উদ্দিন বলেন,মহি উদ্দিন আমাদের সহকর্মী। সে করোনার শুরু থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাতদিন করোনা যুদ্ধে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে।সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

মহি উদ্দিন বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের বাসিন্দা হলেও করোনা মোকাবেলায় করোনাকালীন সময়ে প্রায় তিন মাস যাবত বাড়িতে যেতে পারছে না বলে সে জানান,সে বলেন ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজে নিয়োজিত আছি বিদায় হাসপাতাল থেকে ৮/১০ কিলোমিটার দূরে নিজের আবাসভূমিতে গত তিন মাস যাইনি। কারন যদি আমার দ্বারা এলাকার কেউ ঝুঁকিতে পরে সেই ভয়ে। আমার এই কাজে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আশরাফুল আলম স্যারসহ সকল স্যাররা ও সহকর্মীরা সব সময় আমার মনোবল ঠিক রাখতে উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি প্রত্যেকেই নিজের দায়িত্বের বাইরে এসে খুব হেল্পফুল ভাবে আমাদের একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছেন। বিশেষ করে আমার অফিসের অফিস সহায়ক ইকবার ও মাসুম সার্বক্ষণিক আমার সাথে থেকে আমাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আশরাফুল আলম বলেন, বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জনবল এখনো নিয়োগ না হওয়ায় টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মহি উদ্দিন নিজের পদের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অন্য অনেক গুলো শূন্য পদের দায়িত্বপালন করে। উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ ও জেলার একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে মেইনটেইন সহ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *