Thursday, December 7, 2023
Home > জাতীয় সংবাদ > ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা বিল পাস

ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা বিল পাস

এপিপি বাংলা : বিরোধী দলের বিরোধিতার মুখে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার বিল-২০২০’ বুধবার সংসদে পাস হয়েছে। এর ফলে জরুরি প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে।
এর আগে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারিকৃত অধ্যাদেশের আলোকে করোনাকালে ভার্চুয়ালি আদালত পরিচালিত হয়ে আসছিল। অধ্যাদেশটিকে আইনে পরিণত করতেই বিলটি আনা হয়। বিলের বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনের তাগিদে সীমিত পরিসরে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা করা যাবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে দুপুরে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর জন্য বিরোধী দলের ৮ জন সদস্য প্রস্তাব দেন। তাতেও কেউ কেউ বিলটিকে সংবিধান বিরোধী বলে মত দিয়ে বিলটি এভাবে পাশ না করার আহবান জানান। কেউ কেউ সরাসরি আদালত কার্যক্রম পরিচালনার পক্ষে মত দেন। তাদের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিরোধীতার জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বিলটি নিয়ে বিভাগীয় আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের আইনটি সম্পর্কে কোনো আপত্তি নেই। করোনায় তিন মাস আদালত বন্ধ ছিল, আইনজীবীরা মামলা পরিচালনা করতে পারেননি, তাদের ক্ষতি হয়েছে। আর ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনা করতে সবার (আইনজীবী) কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই। এই তিনটি সমস্যার কথা তারা বলেছেন।
তিনি বলেন, বিশেষ পরিস্থিতি ও বিশেষ প্রয়োজনে এই আইনটি ব্যবহার করা হবে। স্বাভাবিক আদালতের মতোই চলবে। তবে করোনার কারণে পূর্ণাঙ্গ বিচারিক ব্যবস্থা চালু করা এখন কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।
আইনমন্ত্রী বলেন, কারগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অধিক বন্দী রয়েছে। করোনার বন্ধকালে যদি কারাগারে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হতো তবে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতো। করোনার কারণে কোনো আসামীকে আদালতে উপস্থিত করা যাচ্ছিল না, কারাগার ভর্তি হয়ে যাচ্ছিল। সংবিধান বিরোধী আইন হলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করতেন না। সংবিধান মেনেই আইনটা করা হয়েছে। এটা পূর্ণাঙ্গ আইন নয়, সীমিত আকারে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে করা হবে। বিনা বিচারে বহু মানুষ জেল খাটছে, তাদের জামিন দেয়া সাংবিধানিক দায়িত্ব। এ জন্যই ভার্চুয়াল কোর্ট।
এই কোর্টের মাধ্যমে ৭১ হাজার আসামীকে জামিন দেয়া সম্ভব হয়েছে। আমরা সামনের দিকে যাব, পেছনের দিকে যাব না। কিন্তু আইনজীবীদের পেছনে ফেলে যাব না, সঙ্গে নিয়েই যাব।
বিলে ভার্চুয়াল উপস্থিতির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, অডিও-ভিডিও বা অনুরূপ অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির আদালতে বিচার বিভাগীয় কার্যধারায় উপস্থিত থাকা ও অংশগ্রহণ ভার্চুয়াল উপস্থিতি বলে গণ্য হবে। বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনের তাগিদে এই আইনটি প্রয়োগ করা যাবে। সেক্ষেত্রে কোনো মহামারি হলে, জরুরি প্রয়োজন দেখা দিলে বা নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠলে উচ্চ আদালত আইনের ওই বিধান প্রয়োগ করবে।
করোনা মহামারীর মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্য ডিজিটাল মাধ্যমে ভার্চুয়ালি আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ রেখে গত ৭ মে মন্ত্রিসভা এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দেয়ার পর ভার্চুয়াল আদালতের কাজ শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী অধ্যাদেশটি গত ১০ জুন সংসদে উত্থাপন করা হয়। পরে সেটিকে আইনে রূপ দিতে বিলটি উত্থাপন হয় ২৩ জুন। গত ২০ জুন বিলটি পাসের সুপারিশ করে রিপোর্ট দেয় আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *