মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম : গাছ লাগান, জীবন ও পরিবেশ বাচান, এই শ্লোগান কে সামনে রেখে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত এর একক ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদ মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে অদ্য ৩০ জুলাই ২০ইং, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার উদ্যোগে বৃক্ষরোপন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বৃক্ষরোপন কর্মসূচি বাস্তবায়ন উপলক্ষে অবকাশস্থ স্মৃতিসৌধে আজ দুপুর ১২ঃ৩০ ঘঠিকায় ছাত্রসেনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইন শাহ বাবুলের সভাপতিত্ত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য ও জেলা ছাত্রসেনার সাবেক সফল সভাপতি যুবনেতা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, সভ্যতা যতই প্রসারিত হচ্ছে, মানুষ ততই প্রকৃতির জগৎ থেকে নির্বাসিত হচ্ছে। মানুষ নিজ হাতে নির্মুল করছে তার শৈশব সভ্যতার সঙ্গী তরু রাজিকে। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের উপযোগী করতে ও দূষণমুক্ত পরিবেশ গঠনে গাছপালার বিকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, মানুষের অস্থিত্বের জন্য দরকার গাছপালা। গাছপালা অক্সিজেন দিয়ে কেবল আমাদের জীবন রক্ষা করে না, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় পালন করে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা। গাছপালার অভাবে প্রকৃতিতে দেখা দিচ্ছে ভয়াবহ ভূমিক্ষয়, বৃষ্টিহীনতা। তিনি দেশের সর্বস্তরের মানুষকে বৃক্ষরোপনে উৎসাহিত করে এমন কর্মসূচী ঘোষণার দাবী জানিয়ে সরকার কে বলেন, দূষণমুক্ত পরিবেশ গঠনে রাষ্ট্রীয় ভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন ।
ছাত্রসেনার জেলা সভাপতি মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইন শাহ বাবুল বলেন, পরিবেশ বিপর্যয় রোধে বৃক্ষরোপণ।
বৃক্ষ মানুষের পরম বন্ধু। অনেক মানুষের পদভারে কম্পিত এ সুজলা-সুফলা পৃথিবী প্রতিদিন বৃক্ষশূন্য হচ্ছে। অবাধ ও নির্বিচারে চলছে বৃক্ষনিধন। ফলে প্রাণীর জীবনধারণের নিয়ামক অক্সিজেনের সরবরাহ হ্রাস পাচ্ছে প্রবলভাবে। জীবনের জন্য, জীবিকার জন্য বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৃক্ষের গুরুত্ব উপলব্ধি করে বলেছেন, ‘আমরা যেমন স্নান করি এবং শুভ্র বস্ত্র পরিধান করি, তেমনি বাড়ির চারপাশে যত্নপূর্বক একটি বাগান করে রাখা ভদ্রপ্রথার একটি অবশ্য কর্তব্য অঙ্গ হওয়া উচিত।’
বৃক্ষ মূলত পরিবেশ, আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় রাখে। গাছপালা নিয়মিত বৃষ্টিপাতে সাহায্য করে, নদীর ভাঙন থেকে ভূভাগকে রক্ষা করে। বৃক্ষাদি ঝড়-ঝঞ্ঝা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে বাসগৃহকে রক্ষা করে। মোটকথা পৃথিবীকে মনুষ্যবাসের উপযোগী করতে বনাঞ্চল সৃষ্টি ও বন সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক।
একটি দেশের মোট ভূভাগের ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশের বনভূমির পরিমাণ মোট ভূভাগের মাত্র ১৬ ভাগ। সুতরাং বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ অবস্থার আশু পরিবর্তন আবশ্যক। তাই বেশি করে বৃক্ষরোপণের জন্য গণসচেতনতা সৃষ্টির বিকল্প নেই। জাতীয় গণমাধ্যমগুলো এ ব্যাপারে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখতে পারে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও এ মহতী উদ্যোগের অংশীদার করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
সবশেষে এ কথা বলা প্রাসঙ্গিক, বৃক্ষরোপণের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনায় এনে জাতীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। ছাত্রসেনার সহ-সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা মুহাম্মদ উজ্জ্বল হোসাইনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ছাত্রসেনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আজিম উদ্দিন আত্বারী, ছাত্রসেনা বিজয়নগর উপজেলার সভাপতি মুহাম্মদ সাখাওয়াত হোসাইন, ছাত্রসেনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জোবায়ের আহমেদ সহ প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় জেলা ছাত্রসেনার পক্ষ থেকে অবকাশের আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন প্রকারের প্রয় অর্ধশত বৃক্ষরোপন করা হয়। এ সময় বৃক্ষরোপণে উৎসাহী করতে উপস্থিত কয়েকজনের মাঝে কিছু বৃক্ষ বিতরণ করা হয়।