এপিপি বাংলা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতিমদের তাঁর ‘অত্যন্ত কাছের’ এবং ‘আপনজন’ আখ্যায়িত করে তাঁদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তোমাদের একটি কথা বলতে চাই, তোমরা অনাথ এবং অসহায় নও, তোমরা আমার অত্যন্ত কাছের এবং আপনজন। আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সব সময় তোমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং যত দিন আমি বেঁচে আছি তত দিন আমি তোমাদের পাশে আছি।’ তিনি বলেন, ‘তোমাদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ রচনা করাই আমার সব সময়ের প্রচেষ্টা।’
’৭৫ এর ১৫ আগস্ট তাঁর পিতা-মাতা সহ পরিবারের সদস্যদের নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই আমরা এতিমদের বেদনা খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পারি। কারণ আমরা ১৫ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এতিম হয়েছি। তোমরা একেবারে একা না। আমরা আছি তোমাদের পাশে। আমি এবং আমার ছোট বোন (শেখ রেহানা) সব সময় তোমাদের কথা চিন্তা করি,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে মুজিব বর্ষ এবং জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেশের ৮৫টি শিশু পরিবার এবং ছয়টি ‘শিশু নিবাস এর শিশুদের দ্বারা ৫০ হাজারবার কোরআন খতম উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।
সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে আগারগাঁওয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন।
শেখ হাসিনা এ সময় ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট শাহাদত বরণকারী তাঁর ভাই, সন্তান-সন্ততি এবং নাতি-নাতনিদের জন্মদিন এতিমদের সঙ্গে নিয়ে উদ্যাপন করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন,‘আমরা এসব দিনে কোনো প্রকার জন্মদিনের পার্টি বা ভোজের আয়োজন করিনা বরং তোমাদের মতো অনাথদের সঙ্গে নিয়েই পালন করি এবং যা কিছুই আয়োজন থাকে (খাবার-দাবার) তা এতিমখানাতে পাঠিয়ে দিই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি জন্মদিনের পার্টি করায় কোনো লাভ নেই, এটাই সব থেকে বড় কাজ হবে যদি এতিমদের মুখে কিছু খাবার তুলে দেওয়া যায়, সেভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
তাঁর মাতা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছাও একই কাজ করতেন মর্মে স্মরণ করিয়ে দিয়ে জাতির পিতার কন্যা বলেন, ‘মা পরিবারের কারও জন্মদিন হলেই এতিমদের খাবার এবং সাহায্য পাঠাতেন।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ মূল অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা করেন। প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব জয়নুল বারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিশু পরিবারের দুই খুদে সদস্য সামিয়া আখতার এবং বিজয় ইসলামও বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পিএমও সচিব তোফাজ্জ্বল হোসেন মিয়া এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় অন্যান্যের মধ্যে গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।
তোমরাই আমার আপনজন : এতিমদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
